গরুর দুধ ও এ্যালার্জি

গরুর-দুধ-ও-এ্যালার্জি

গরুর দুধ ফুড এ্যালার্জির অন্যতম প্রধান একটি কারণ এবং এর কারণে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে প্রতি ৫০জন শিশুর মধ্যে ২জন শিশু এ্যালার্জি আক্রান্ত হয়। যদিও বেশির ভাগ শিশু ৪ বছরের মধ্যেই এ জাতীয় এ্যালার্জি যুক্ত হয়ে বড় হয়ে ওঠে কিন্তু কেউ কেউ সারাজীবন ধরেই এ জাতীয় এ্যালার্জি সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুুখীন হন।
গরুর দুধ পান করার ফলে সৃষ্ট তাৎক্ষনিক এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া এবং একজিমা প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে খুবই কম দেখা যায়।
গরুর দুধ পান করার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে বা বেশ কিছুদিন পর এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। যেমন-
১) প্রথম শেণী : এশ্রেণীর রোগীরা খুব অল্প পরিমাণ দুধ পান করার পর খুব দ্রুত অর্থাৎ কয়েক মিনিট থেকে এক ঘন্টার মধ্যে এ সংক্রান্ত লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে। এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট লক্ষণ সমূহের মধ্যে রয়েছে আর্টিকেরিয়া বা আমবাত, একজিমা, মুখমন্ডল ফুলে যাওয়া, বমি, ডায়রিয়া , অস্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদি। এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার তীব্রতার মাত্রা অধিক হলে শিশুরা শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে এবং উপরে বর্ণিত লক্ষণ সমূহ মারাতœক আকার ধারণ করে।
প্রথম শ্রেণীর রোগীদের জন্য এ্যালার্জির টেস্ট করানো আবশ্যক। যা কিনা স্কিন প্রিক টেস্ট এবং রক্ত পরীক্ষার দ্বারা নিশ্চিত করা যেতে পারে। কারণ এ জাতীয় এ্যাালার্জিক প্রতিক্রিয়া আইজি-ই এর কারণ হয়ে থাকে।
২) দ্বিতীয় শ্রেণী : দ্বিতীয় শ্রেণীর রোগীদের ক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ গরুর দুধ পান করার ফলে এ্যালার্জিক লক্ষণ সমূহ (বমি ও ডায়রিয়া) ধীরে অর্থাৎ কয়েক ঘন্টা পর প্রকাশ পায়।
এ জাতীয় এ্যালার্জির ক্ষেত্রে রক্তের শ্বেতকণিকা গরুর দুধের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে থাকে। যার ফলে অন্ত্র ও চামড়ায় প্রদাহের মাধ্যমে এ সকল লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে, এক্ষেত্রে এ্যালার্জিক টেস্ট (স্কিন প্রিক টেস্ট ও রক্ত পরীক্ষা) যথেষ্ট ফলপ্রসু নয়, কারণ এটি আইজি-ই ঘটিত এ্যালার্জি নয়।
৩) তৃতীয় শ্রেণী : কিছু কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক পরিমাণ গরুর দুধ পান করার ফলে এ্যাকজিমা, বমি, ডায়রিয়া বা শ্বাসকষ্ট জাতীয় লক্ষণসমূহ প্রকাশ পায় এবং এ লক্ষণসমূহ সাধারণত এক বা একাধিক দিন পরে প্রকাশ পায়। এক্ষেত্রে এ্যালার্জিক টেস্ট (স্কিন প্রিক টেস্ট ও রক্ত পরীক্ষা) যথেষ্ট ফলপ্রসু নয়। কারণ এটিও আইজি-ই ঘটিত এ্যালার্জি নয়। তবে ধারণা করা হয় যে রক্তের টি কোষের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
এখানে উল্লেখ্য যে, এ্যালার্জিক টেস্টের জন্য ভেগা টেস্টিং, কাইনেসিওলজি, সাইটোক্সিক ফুড টেস্টিং, হেয়ার এনালাইসিস, অথবা এলক্যাট টেস্ট জাতীয় টেস্ট সমূহ অণুসরণ করা হয় না। কারণ এ সকল টেস্ট সমূহ বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবে স্বীকৃত নয়।
সঠিকভাবে রোগনির্ণয় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঃ যেসব ব্যক্তিরা গরুর দুধ পান করার পর তাৎক্ষণিকভাবে এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখায় তাদের ক্ষেত্রে এ্যালার্জিক টেস্টের (স্কিন প্রিক টেস্ট ও রক্ত পরীক্ষা) মাধ্যমে এ্যালার্জির প্রতৃতি সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু যেসব রোগী খুব ধীরে এ সংক্রান্ত লক্ষণসমূহ প্রকাশ করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় খুবই দুরূহ।
তাদের ক্ষেত্রে দেরীতে এ সংক্রান্ত এ্যালার্জির লক্ষণসমূহ প্রকাশ পায়, তাদের জন্য এ্যালার্জিক টেস্টের পরিবর্তে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হয়। এক্ষেত্রে তাদের বাল্যকাল থেকে চলে আসা চামড়া, শ্বাস-প্রশ্বাস ও অন্ত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাদের রোগ সঠিকভাবে নির্ণয় করা হয়।
তবে এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, রোগ নির্ণয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামশের প্রয়োজন।
নিশ্চিতভাবে রোগ নির্ণয় করার জন্য নিম্নলিখিত চিকিৎসাশাস্ত্র ও বৈজ্ঞানিভাবে প্রমাণিত পদ্ধতিসমূহ অনুসরণ করা হয়।
ক) স্কিন প্রিক টেস্ট : সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত প্রোটিনের (এ্যালার্জির জন্য দায়ী গরুর দুধের প্রোটিন) জন্য পরিমাণ নির্ণয় করার মাধ্যমে এ টেস্টটি সম্পন্ন করা হয়। এই টেস্টটি সম্পাদন করার জন্য কোন সুনির্দিষ্ট বয়সসীমা নেই। যে কোন বয়সের শিশু এই টেস্টের মুখোমুখি হতে পারে।
এ টেস্টের রেজাল্ট ৯৫% পজেটিভ হলে তা গরুর দুধের এ্যালার্জির জন্য পজেটিভ বলে বিবেচিত হয়।
খ) এ্যালার্জেন সংশ্লিষ্ট রক্ত পরীক্ষা : রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নির্দিষ্ট দুগ্ধ প্রোটিনের জন্য অ্যান্টিবডির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। রেজাল্ট ৯০% পজেটিভ হলে তা গরুর দুধের এ্যালার্জির জন্য পজেটিভ বলে বিবেচিত হয়।
গ) খাদ্যতালিকা হতে গরুর দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য দ্রব্য অপসারণ ও অন্তর্ভুক্তিকরণ ঃ খাদ্য তালিকা হতে দুধ, দুগ্ধজাত খাবার দৈনন্দিন অপসারণের ফলে যদি এ্যালিার্জর কারণগুলো দূর হয় এবং পুনরায় অন্তর্ভূক্তিতে যদি পূর্বের লক্ষণসমুহ আবার ফিরে আসে তবে গরুর দুধের প্রতি এলার্জি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এধরনের রোগ নির্ণয়কারী পরীক্ষাসমূহ খুবই সীমিত সময়ের জন্য করা হয়। তবে এধরনের পরীক্ষা করার পূর্বে অবশ্যই এ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ ও খাদ্যাভ্যাস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ প্রয়োজন । নিশ্চিতভাবে রোগ নির্ণয় ব্যতীত দীর্ঘ সময়ের জন্য দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার বর্জন করা উচিত নয়।
এখানে উল্লেখ্য যে, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার পরিহার এবং পুনরায় খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। আর এজাতীয় পরীক্ষা শুধুমাত্র প্রকটভাবে এ্যালার্জিক লক্ষণসমূহ প্রকাশকারী রোগীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। খাদ্য তালিকা হতে গরুর দুধ সম্পূর্ণভাবে পরিহার করা বেশ কষ্টসাধ্য এবং এটি করার পূর্বে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাস বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
যদি এ পরিহারকরণ দীর্ঘ মেয়াদি হয় তবে রোগীদের ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরনে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শিশু ও তার মায়ের জন্য বিকল্প উৎস বা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা আরো বেশি।
দুগ্ধজাত দ্রব্য পরিহারের মাধ্যমে চিকিৎসা ঃ দুধের এ্যালার্জির চিকিৎসার জন্য খাদ্য তালিকা হতে গরুর দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে এবং ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে উপযুক্ত কোন বিকল্প খাদ্যের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদিও শিশুদের জন্য দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য পরিহার সহজসাধ্য নয়।
গরুর দুধের প্রতি এ্যালার্জিক শিশুদের বাবা-মায়ের উচিত সকল প্রকার তৈরি খাবারের গায়ে লাগানো লেবেল সঠিকভাবে পড়া এবং গরুর দুধ বা ছাগলের দুধ আছে এ জাতীয় খাবার পরিহার করা। এছাড়াও পনির, মাখন, ঘি, ননীজাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত।
কোন কোন ক্ষেত্রে দুগ্ধপোষ্য শিশুরা মায়ের দুধের মাধ্যমে প্রাপ্ত এ্যালারজেনের দ্বারা গরুর দুধের প্রতি এ্যালার্জি আক্রান্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে মায়ের খাবার থেকে গরুর দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে এং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তবে এ জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী হতে হবে।
এখানে লক্ষণীয় যে, গরুর দুধের ঘাটতি পূরণে অবশ্যই বিকল্প খাবারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে । সে রকম কিছু বিকল্প খাবার সম্পর্কে নিচে বর্ণনা করা হল-
১) সয়া-প্রোটিন ফর্মুলা : ৫৩-৮৩% শিশু যারা কিনা গরুর দুধের প্রতি এ্যালার্জিক তারা এ সয়া-প্রোটিন ফর্মুলা খেতে পারে। যদিও ১৭-৪৭% শিশুরা এ ফর্মুলার প্রতি এ্যালার্জির লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে এবং সেক্ষেত্রে এসব শিশুদের জন্য এ ফর্মুলা কোন বিকল্প খাবার বা ফর্মুলা হতে পারে না। তবে একটু বেশি বয়সের শিশুরা এ সয়া-প্রোটিন ফর্মুলা কোন প্রকার সমস্যা ছাড়াই খেতে পারে।
২) এক্সটেনসিভলি হাইড্রোলাইজড ফর্মুলা : এটা তৈরী করা হয় গরুর দুধ থেকেই। তবে এতে ক্ষতিকর এলারজেন অর্থাৎ প্রোটিনগুলো থাকে না। যার ফলে এ ফর্মুলা খেলে এ্যালার্জি আক্রান্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। গরুর দুধের প্রতি এ্যালার্জি আক্রান্ত শিশুদের জন্য এ ফর্মুলা অধিক কার্যকরী কারণ এতে ক্ষতিকর প্রোটিন ব্যতিত গরুর দুধের অন্যান্য সকল উপাদান থাক্।ে তবে এ ফর্মুলা স্বাদ কিছুটা কটু। সেজন্য গরুর দুধ পরিহার করার পর এ ফর্মুলার সাথে মানিয়ে নেওয়ার বিষয়টা একজন খাদ্যাভ্যাস বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করেই নির্ধারণ করা উচিত।
৩) এমাইনো এসিডভিত্তিক ফর্মুলা : সকল শিশু পূর্বোক্ত ফর্মুলার প্রতি যে এলারজিক তাদের জন্য নিওকেট এলিফেযার জাতীয় এমাাইনো এসিডভিত্তিক ফর্মুলা যথেষ্ট উপকারী, তবে এক্সটেনসিভলি হাইড্রোলাইজড ফর্মুলার কারণে এ্যালার্জি হচ্ছে এ প্রমাণ পাওয়ার পরেই এমাইনো এসিডভিত্তিক ফর্মুলা গ্রহণ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। নিউকেট ও এলিফেয়ার উভয়েই পিবিএস এর তালিকাভুক্ত।
সব ফর্মুলাই এ্যালার্জিক শিশুদের জন্য উপযোগী নয়: গরুর দুধের প্রতি এ্যালার্জিক শিশুরা সাধারণত এতে বিদ্যমান কিছু প্রোটিনের জন্য এ সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়। যে প্রেটিনগুলো অন্যান্য প্রাণীর (ঘোড়া, ছাগল ইত্যাদি) দুধেও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ঐ দুধ খেলেও এ্যালার্জি হতে পারে। সুতরাং যদি কোন ফর্মুলা গরুর দুধ ব্যতীত ঐসব প্রাণীর দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়, তবে তার কারণেও এ্যালার্জি হতে পারে। সুতরাং ঐসব দুধ ও তাদের থেকে তৈরি ফর্মুরা পরিহার করাই শ্রেয়।
“তথাকথিত এ২ মিল্ক” (বিশেষ ধরনের শংকর জাতের গরুর দুধ) যা কিনা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে দাবি করা হয় সেটিও এ্যালার্জিক শিশুদের জন্য ক্ষতিকর । এ্যালার্জির জন্য দায়ী ঐসব প্রোটিন অপসারণের জন্য দুধকে এনজাইম দ্বারা পরিশোধন করা হয়। এরকম আংশিকভাবে পরিশোধিত দুধ শিশুদের এ্যালার্জি প্রতিরোধে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু শিশুদের এ্যালার্জি প্রতিকার এ ধরনের (যেমনঃ এনএএন-এইচএ) না খাওয়ানোই ভালো।
গরুর দুধের কারণে এ্যালার্জি দীর্ঘ মেয়াদী কোন ব্যধি নয় ঃ তিন বছর বয়সেই ৮০% শিশু এ জাতীয় সমস্যাযুক্ত হয়ে বেড়ে উঠে। তবে পুনরায় গরুর দুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞচিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রোগীর পুর্র্বের ইতিহাস ও রোগের তীব্রতার উপর ভিত্তি করে কিছু টেস্ট করা হয় । আর ঐ টেস্টের ফলাফলের উপর ভি্িত্ত করে পুনরায় গরুর দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয় হয়।
গরুর দুধের সাথে অন্যান্য খাবারের প্রতিও এ্যালার্জি থাকতে পারে ঃ কোন শিশুর গরুর দুধের সাথে সাথে অন্যান্য খাবারের (যেমন ডিম, সয়াবিন, চিনাবাদাম ইত্যাদি) প্রতিও এ্যালার্জি থাকতে পারে। এ প্রকার এ্যালার্জি অর্থাৎ একাধিক খাবারের প্রতি এ্যালার্জিকে বলা হয় মাল্টিপলএ্যালার্জি। এক্ষত্রে এক্সটেনসিভলি হাইড্রোলাইজড ফর্মূলা ইএইচএফ কার্যকরী হবে ন্ া। কারণ এইএইচএফ গরুর দুধের এ্যালারজেনকে প্রতিহত করলেও অন্যান্য খাবারের এলারজেন এ্যালার্জি সৃষ্টি করতে সক্ষম । এরকম মাল্টিপল এ্যালার্জি আক্রান্ত শিশুদের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য।
গরুর দুধের অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ গরুর দুধের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো ল্যাকটোজ। অনেকে এ ল্যাকটোজ হজম করতে পারে না। কারণ তাদের ল্যাকটোজ হজম করার মত প্রয়োজনীয় ল্যাকটোজ এনজাইমের স্বল্পতা রয়েছে। এর ফলে ব্যক্তিরা দুধ খেলে ডায়রিয়া, বমি ও তলপেটে ব্যথাজাতীয় সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ সকল লক্ষণগুলো অস্বস্তিকর কিন্তু ক্ষতিকর নয়। এসব ব্যক্তিরা সামান্য পরিমাণ দুধ ও অন্যরা বিশেষ কিছু দুগ্ধজাত খাবান খেতে পারে। এদের ক্ষেত্রে প্রিক টেস্ট ও রক্ত পরীক্ষার ফলাফল হয় নেগেটিভ। অর্থাৎ এটি এ্যালার্জি নয়। এসব ব্যক্তি যদি দুধ পরিহার করেন কিংবা ল্যাকটোজ বিহীন খাবার গ্রহন করেন তবে এ সকল অস্বস্তিকর ব্যাপারগুলো এড়াতে পারেন।
অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে-
১) ইউসিনোফিলিক ইসোফ্যাগাইটিস
২) গ্যাস্ট্রোইসোফিজিয়াল রিফ্লাক্স
৩) ইসোফ্যাগাইটিস
৪) এন্টারোপ্যাথি ইত্যাদি
এসব লক্ষণসমূহ গরুর দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার পরিহার করলে দূরীভূত হয়।

আলোচক:-

অধ্যাপক_ডাঃ গোবিন্দ_চন্দ্র_দাস
এমবিবিএস, ডিসিএইচ, এমসিপিএস
স্পেশিয়ালাইজেসন ইন এলার্জি এন্ড এ্যাজমা (স্পেন )
ফেলো, ইন্ডিয়ান কলেজ অব এলার্জি, এ্যাজমা এন্ড ইমুনোলজী
এলার্জি ও এ্যাজমা বিশেষজ্ঞ
প্রতিষ্ঠাতা বিভাগীয় প্রধান (অব:)
এলার্জি এন্ড ক্লিনিক্যাল ইমুনোলোজী বিভাগ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল , ঢাকা।

--- লেখাঃ অধ্যাপক ডাঃ গোবিন্দ চন্দ্র দাস।

Post a Comment

Previous Post Next Post